মাদারীপুরে গ্রাম আদালতে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি, মানুষের ভোগান্তি কমেছে

ইত্তেফাক পত্রিকার মূল প্রতিবেদেন সার সংক্ষেপ

মাদারীপুরে গত এক বছরে গ্রাম আদালতে ১১২৯টি দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। আইনজীবী ছাড়াই দ্রুত অভিযোগ নিষ্পত্তি হওয়ায় গ্রাম আদালত ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এতে উভয় পক্ষই সন্তুষ্ট। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা বলছেন, এ কার্যক্রমের ফলে বড় ধরনের অপরাধ হ্রাস পাচ্ছে এবং মানুষের হয়রানি কমেছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, মাদারীপুরের ৫৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪৭টিতে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম রয়েছে। এজলাস পরিচালনার জন্য ৫৫টি ইউনিয়নে হিসাব সহকারী নিয়োগ করা হয়েছে। মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে অভিযোগ দায়ের করা সম্ভব এবং ৬০ দিনের মধ্যে সমাধান দেওয়া হয়, যা গ্রাম আদালতের জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে।

২০২৪ সালের বিচারিক সাফল্য
স্থানীয় সরকার বিভাগের তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্রাম আদালতে দেওয়ানি মামলার ৪২১টি অভিযোগের মধ্যে ৪১৯টি নিষ্পত্তি হয়েছে। বাকি দুটি মামলা এখনও চলমান। দেওয়ানি মামলা থেকে এক কোটি ৬১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে।
অন্যদিকে, ৭১৭টি ফৌজদারি মামলার অভিযোগ দাখিল হয়, যার মধ্যে ৭১০টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। বাকি ৭টি মামলা এখনো প্রক্রিয়াধীন। ফৌজদারি মামলার জরিমানার মাধ্যমে আদায় হয়েছে ছয় লাখ ২১ হাজার ৮০০ টাকা।

গ্রাম আদালতের সেবার ক্ষেত্র
গ্রাম আদালতে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার, ক্ষতিপূরণ আদায়, কৃষি শ্রমিকদের পাওনা, স্ত্রী কর্তৃক বকেয়া ভরণপোষণ আদায়, পারিবারিক সমস্যা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও ইভটিজিংয়ের অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়।

স্থানীয় চেয়ারম্যানদের অভিমত
কালকিনি উপজেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহিম বলেন, “গ্রাম আদালতের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ দ্রুত বিচার পাচ্ছেন। অভিযোগ দাখিলের পর দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়ায় আপিলের প্রয়োজন হয় না। অভিযোগকারী ও বিবাদী উভয়ই সন্তুষ্ট থাকেন। এখানে পাঁচ সদস্যের কমিটি রায় প্রদান করে।”
ঘটমাঝি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট বাবুল আখতার বলেন, “গ্রাম আদালতের কার্যক্রমে মানুষের অর্থ ও সময় বাঁচছে। সমস্যার সমাধান হওয়ায় বড় অপরাধ প্রবণতাও কমছে।”

স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগ
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মুহাম্মদ হাবিবুল আলম বলেন, “মাত্র ১০ টাকায় অভিযোগ দায়ের করে বাড়ির কাছেই দ্রুত সমাধান পাওয়া সম্ভব। গ্রাম আদালতের সেবা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং এর ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *