মুস্তাক এইচ. খানের Institutions and Asia’s Development: The Role of Norms and Organizational Power” এর অবলম্বনে
গুনার মিরডালের Asian Drama থেকে শুরু করে পরবর্তী প্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতির তত্ত্ব পর্যন্ত—এশিয়ার উন্নয়ন নিয়ে বিতর্কে সবসময়ই গুরুত্ব পেয়েছে “সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ” ও “প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো”। কিন্তু মুস্তাক এইচ. খান দেখিয়েছেন, কেবল আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠান বা সংস্কৃতিগত নীতি দিয়ে উন্নয়নের সাফল্য বা ব্যর্থতা ব্যাখ্যা করা যায় না।
🔹 মূল ধারণা: “Political Settlement” বা রাজনৈতিক সমঝোতা
একটি দেশের সংগঠনগত ক্ষমতার বণ্টন—যেটিকে বলা হয় political settlement—নির্ধারণ করে কোনো প্রতিষ্ঠান কার্যকর হবে কি না এবং ভাড়া বা রেন্ট (rent) উৎপাদনশীলভাবে ব্যবহার হবে কি না।
প্রতিষ্ঠান তখনই সফল হয়, যখন তার বাস্তবায়ন ক্ষমতাশালী সংগঠনগুলোর স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
🔹 শিল্পনীতির শিক্ষা
- দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ান: রাষ্ট্র বড় শিল্পগোষ্ঠীগুলোকে (chaebol) কর্মদক্ষতার সঙ্গে বেঁধে রাখত, যেমন রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণের শর্ত। ফলে ভাড়া বা সুবিধা উৎপাদনশীলতায় বিনিয়োগ হতো।
- দক্ষিণ এশিয়া: একই ধরনের নীতি ব্যর্থ হয়েছিল, কারণ ক্ষমতাশালী ব্যবসায়ী–রাজনৈতিক নেটওয়ার্ক ব্যর্থ হলেও তাদের সুবিধা রক্ষা করতে পেরেছিল।
- পরে সেক্টরভিত্তিক সাফল্য: যেমন বাংলাদেশের পোশাক খাত, ভারতের গাড়ি ও ওষুধ শিল্প—এগুলোতে শর্তসাপেক্ষ ও ফলভিত্তিক প্রণোদনা দেয়া হয়েছিল, যা রাজনৈতিকভাবে রক্ষা করা সম্ভব ছিল না।
🔹 ধাপে ধাপে না এক ধাক্কায় পরিবর্তন?
- মিরডাল বড় ধরনের পরিবর্তনের পক্ষে ছিলেন, কিন্তু খান দেখিয়েছেন—ধাপে ধাপে, রাজনৈতিক বাস্তবতা মেনে, প্রয়োগযোগ্য সংস্কারের মাধ্যমেও বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব।
- চীনের সাফল্য এসেছে কমিউনিস্ট পার্টির শক্তিশালী সংগঠনগত ক্ষমতা থেকে, যা উন্নয়নমূলক নীতি প্রয়োগে কার্যকর হয়েছে—যদিও তা এসেছে ব্যয়বহুল সামাজিক upheaval-এর মাধ্যমে।
🔹 নীতি প্রস্তাব
উন্নয়নের জন্য পশ্চিমা ধাঁচ কপি না করে, দেশের রাজনৈতিক ক্ষমতার কাঠামো অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান ও নীতি তৈরি করতে হবে।
যেখানে ভাড়া বা সুবিধা প্রদান ও প্রত্যাহার কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সেখানে ধাপে ধাপে খাতভিত্তিক উন্নয়ন ঘটিয়ে সময়ের সাথে সাথে সামগ্রিক রাজনৈতিক কাঠামোকে শক্তিশালী করা সম্ভব।
✍️ মূল বার্তা:
প্রতিষ্ঠান তখনই কাজ করে, যখন তা দেশের বাস্তব রাজনৈতিক ক্ষমতার ভারসাম্যের সঙ্গে খাপ খায়। তাই উন্নয়ন নীতি হতে হবে বাস্তবমুখী, ক্ষমতার কাঠামোর সাথে মানানসই এবং অনেক সময় ধাপে ধাপে অগ্রসরমান।